শিশুদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বড়দের চেয়ে কম বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শিশুদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও করোনা থেকে তাদের রক্ষা করতে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুর করোনা আক্রান্তের শঙ্কা ও ঝুঁকি কমানোর ওপর ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন-ইউসিএল এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন পরিচালিত পুরো বিশ্বের ৬৩৩২টি গবেষণা মূল্যায়ন করে দেখেছে। এসব গবেষণা মূল্যায়নের পর এই দুটি প্রতিষ্ঠান যে তথ্য দিয়েছে তা হলো, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ব্যক্তির তুলনায় শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫৬ শতাংশ কম। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও মারাত্মক অসুস্থ হওয়া বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি শিশুদের কম থাকে।
আবার আমাদের দেশের কোনো শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা বোঝা কঠিন বলে মনে করেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. হেলেনা বেগম।
ডা. হেলেনা বেগম বলেন, ‘অনেক পরিবারের মানুষেরা বুঝতেই পারে না যে তাদের বাচ্চা কোভিড আক্রান্ত কিনা। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের কোন উপসর্গ থাকে না। যাদের জ্বর নাই, কাশি নাই, ছোট বাচ্চা হলে তো বলতেই পারে না যে গলাব্যথা হয়েছে, সে কারণে বোঝাটাই কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে শিশুরা যেসব রোগে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ। আর এর উপসর্গ হচ্ছে নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি দেওয়া, গর-গর করে শব্দ করা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে গলাব্যথা অথবা কানে ব্যথা। করোনার উপসর্গগুলোও অনেকটা একই রকম। সে কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি নাকি শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ নাকি করোনা তা বোঝা যায় না।’
শিশুদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। আর তাই এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত শিশুদের থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি কতটা তা দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমটি হচ্ছে, শিশুর হাঁচি-কাশির মতো উপসর্গ বেশি থাকলে তার থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি থাকবে। আর উপসর্গ মৃদু থাকলে বা কম থাকলে ঝুঁকি কিছুটা কম থাকবে। কারণ এতে ড্রপলেটস নির্গত হওয়ার বিষয়টি জড়িত থাকে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, কন্টাক্ট টাইম বা সংস্পর্শে আসার সময় কতটা ‘
তার মতে, যদি করোনো আক্রান্ত কোনো শিশু দীর্ঘ সময় ধরে বয়স্ক কারো সংস্পর্শে থাকে তাহলে ঝুঁকির মাত্রাটা এমনিতেই বেড়ে যাবে। তবে সব মিলিয়ে শিশুদের থেকে বড়দের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি খুব বেশি না।